অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইউরোপের কয়েকটি দেশে বার বার পবিত্র কুরআনের অবমাননার ঘটনা ঘটার প্রেক্ষাপটে এর বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন মুসলিম বিশ্বের কোনো কোনো নেতৃবৃন্দ।
এ প্রসঙ্গে লেবাননের হিজবুল্লাহ’র মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ গত মঙ্গলবার এক ভাষণে বলেছেন, কুরআনের ওপর হামলাকারীরা অনুশোচনা করবে।
তিনি বলেছেন, সুইডেনে নতুন করে পবিত্র কুরআনের অবমাননার ঘটনা বিশ্বের দুইশ কোটি মুসলমানকে অপমান করেছে। হিজবুল্লাহর মহাসচিব বলেছেন, ইমাম হুসাইন (আ) কারবালায় ইসলামকে রক্ষার জন্য যেমন আহ্বান জানিয়েছিলেন, কোনো সাহায্যকারী কি আমায় সাহায্য করতে প্রস্তুত? তেমনি বার বার অবমাননার শিকার তথা পুড়তে থাকা পবিত্র কুরআনও এখন যেন সেই একই সুরে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে বলছে, কোনো সাহায্যকারী কি আছে আমায় সাহায্য করার?
হিজবুল্লাহর প্রধান একই সময়ে কুরআন অবমাননার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি নতুন করে কুরআন অবমাননার সুযোগ করে দেয়ার পদক্ষেপকে সুইডিশ সরকারের কপটতা বা মুনাফিকি বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি পবিত্র কুরআন অবমাননার প্রতিক্রিয়ায় আয়োজিত ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি’র বৈঠকের ফলাফলকে বরাবরের মতই দুর্বল বলে অভিহিত করে বলেছেন, ওআইসির কাছ থেকে এর বেশি কিছু আশা করা যায় না। জনাব নাসরুল্লাহ মুসলিম সরকারগুলোর পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা না করে পবিত্র কুরআনের সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে মুসলিম যুব সমাজের প্রতি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ওআইসি’র দুর্বল নীতি ও পদক্ষেপকে তিরস্কার করে হিজবুল্লাহর প্রধান বলেছেন, ওআইসির এ রকম দুর্বল অবস্থান থেকেই আমরা ইমাম হুসাইনের চরম দুর্ভোগ পোহানোর কারণ বুঝতে পারছি, এবং সমসাময়িক যুগে ফিলিস্তিন ও মুসলমানদের প্রথম কিবলা হারানোর কারণও বুঝতে পারছি।
সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার আহ্বান জানাতে গিয়েও বলেছেন, জনগণ যদি সরকারগুলোর অপেক্ষায় না থেকে নিজেরাই স্বনির্ভর হয়ে আন্দোলনে এগিয়ে আসে তাহলে তারা বিজয় অর্জনে সক্ষম হবে। লেবাননের জনগণ যদি আরব ও মুসলিম সরকারগুলোর সাহায্যের অপেক্ষায় বসে থাকত তাহলে ইসরাইলের কাছ থেকে দক্ষিণ লেবাননকে কখনও উদ্ধার করতে সক্ষম হত না।
পবিত্র কুরআনের অবমাননা বন্ধ করার প্রসঙ্গে তিনি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সমাজের অবস্থানের নিন্দা জানিয়ে বলছেন, এইসব আন্তর্জাতিক সমাজ কেবল মিথ্যা বলতে ও ধোঁকা দিতে অভ্যস্ত।
এটা স্পষ্ট যে পবিত্র কুরআনের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের আগ্রাসী অবস্থান বন্ধ করতে হলে মুসলিম জাতিগুলোকে কার্যকর ও ঐক্যবদ্ধ কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন, এইসব সরকারের ওপর অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক অবরোধ আরোপ এবং কুরআন অবমাননাকারীদের কঠোর শাস্তি দিতে তাদের নিরাপত্তার ওপর এমন আঘাত হানা যাতে এরপর কেউ এমন পদক্ষেপ নেয়ার চিন্তাও মাথায় আনতে না পারে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনি সম্প্রতি এক বিবৃতিতে কুরআন অবমাননাকারীদের কঠোরতম শাস্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
Leave a Reply